বুধবার, ১ মে, ২০১৩
কিডনি ভালো রাখুন
কিডনি ভালো রাখতে হলে পানি পান করতে হবে; কিন্তু কতটা পানি যথেষ্ট? এটা জানার আগে ছোট আরেকটি তথ্য জানা যাক। একজন মানুষ কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত খাবার না খেয়ে বাঁচতে পারে; কিন্তু পানি ছাড়া দু-তিন দিনের বেশি নয়। এর কারণ খাদ্য শরীরে চর্বি হিসেবে জমা থাকতে পারে, পানি জমে থাকে না। শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সচল রাখতে পানি প্রয়োজন।
পানি অনেকভাবেই শরীরে প্রবেশ করে। ফল, জুস এমনকি ভাতের মাধ্যমেও পানি প্রবেশ করে শরীরে। তবে আলাদাভাবে পানি পান করতেই হবে। পানিশূন্যতা রোধ করতে পানি পান করতে হবে। পানিতে কোনো ক্যালরি নেই, খরচ কম, সব জায়গায় সহজলভ্য। তাই পিপাসা মেটাতে পানিই হতে হবে প্রধান ভরসা। তবে পানিতে ফ্লোরাইড ও আরো কিছু খনিজ উপাদান থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। পানি কতটুকু পান করতে হবে তার একটি সাধারণ হিসাব আছে। ২৪ ঘণ্টায় অন্তত আট গ্লাস পানি পান করতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন। তবে তাপমাত্রা, পরিশ্রম, কাজের ধরন ইত্যাদি অনুসারে কম বেশি হতে পারে। অনেকে পানির এই পরিমাণ পূরণ করেন চা, কফি ও জুস পান করে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পানির অভাব পানি দিয়েই পূরণ করা স্বাস্থ্যসম্মত। তাই প্রতিদিন আট গ্লাস পানি পান করুন, এর বাইরে প্রয়োজনমতো চা-কফি খেতে পারেন।
আগেই বলা হয়েছে, খাবারের মাধ্যমেও শরীর পানি পায়। আমরা যে ধরনের খাবার খাই তাতে সাধারণত পানির পরিমাণ ২০ শতাংশ। ফলে পানির হার বেশি। যেমন_তরমুজ, শসায় পানির হার প্রায় শতভাগ। দুধও অনেকটাই এ রকম। চা, কফি ও কোমল পানীয় থেকেও শরীর পানি পায়।
কিছু কিছু শারীরিক অবস্থায় পানি পান পানের দিকে বাড়তি লক্ষ রাখতে হবে।
* ক্রনিক কিডনি ডিজিজ থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে পানির পরিমাণ ঠিক করতে হবে।
* আবার যাঁরা ব্যায়াম করেন, ঘামের মাধ্যমে তাঁদের শরীর থেকে পানি বের হয় বেশি, তাই তাঁদের বেশি করে পানি পান করতে হবে।
* যাঁরা খেলোয়াড় তাঁরা পানি হিসেবে স্পোর্টস ড্রিংক পান করতে পারেন, বিশেষ করে খেলার সময়। কারণ এই বিশেষ ড্রিংকে সোডিয়াম থাকে, তাই অতিরিক্ত ঘাম হয়ে হাইপোন্যাট্রেমিয়ার মতো প্রাণঘাতী অবস্থা থেকে বাঁচতে এই ড্রিংক বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
* গরম আবহাওয়ায় ঘাম বেশি হয়, দ্রুত শরীর পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হয়। তাই প্রয়োজন বাড়তি পানীয়।
* পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারীদের বেশি পানি পান করা উচিত। কারণ উচ্চ স্থানে বসবাসের কারণে তাদের শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়, প্রস্রাব বেশি হয়, পরিশ্রম বেশি করতে হয়।
* প্লেনে করে যাত্রাপথে বেশি করে পানি পান করতে হয়। সাড়ে আট হাজার ফুটের ওপর দিয়ে যখন প্লেন চলাচল করে তখন শরীর থেকে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে বেশি পানি বের হয়।
* জ্বর, বমি, ডায়রিয়ায় পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই এ ধরনের অবস্থায় বেশি করে পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে।
* প্রস্রাবে ইনফেকশন, মূত্রথলিতে ইনফেকশন, কিডনিতে পাথর হলে বাড়তি পানি পান করা উচিত।
* হার্ট ফেইলিওর, এড্রেনাল অসুখ ও লিভারের কিছু অসুখে আবার পানি কম পান করতে হয়। এ ধরনের অসুখ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো পানি পান করুন।
* গর্ভবতী ও মাতৃদুগ্ধদানকারী নারীর জন্য বাড়তি পানি প্রয়োজন।
* উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার (চর্বিযুক্ত, মাংসজাতীয় খাবার) খেলে বাড়তি পানি পান করতে হয়।
–ডা. কাজী আরহাম আবদুল্লাহ
বিএসএমএমইউ, ঢাকা
সুত্র- দৈনিক কালের কণ্ঠ।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
Write commentsThanks for your comment!!