http://protoster.blogspot.com/

শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬

BCS_লিখিত_পরীক্ষা


This writing should be read by the candidates going to sit for 37th BCS WRITTEN EXAM........
ইদানীং আমার কাছে মেসেঞ্জারে অনেক প্রশ্ন আসছে। নানাবিধ ব্যস্ততার কারণে সবার প্রশ্নের যথাসময়ে উত্তর দেয়া সম্ভব হচ্ছে না এবং কারো কারো প্রশ্নের উত্তরই দেয়া হয় না। এছাড়া অনেক ফ্রেন্ড রিকুয়েস্টও আসছে। তবে সবার ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট গ্রহণ করতে পারছি না বলে দুঃখ প্রকাশ করছি। ইতোমধ্যেই ৩৪ তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় আমার প্রাপ্ত নাম্বার (৫৯০) অনেকেই দেখেছেন। নাম্বার দেখে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন! অনেকের প্রশ্ন, এত নাম্বার উঠানো কীভাবে সম্ভব? আবার কেউ কেউ হয়তো ভাবছেন আমার মত কম মেধাবীর পক্ষে এত নাম্বার উঠানো কীভাবে সম্ভব হলো। আমার মতে, আমার নাম্বার খুব যে ভালো উঠেছে তা কিন্তু নয়। দুই/তিনটা বিষয়ে আমার প্রত্যাশিত নাম্বার উঠেনি। আমি বাংলাদেশ বিষয়াবলী ১ম পত্রে ৫০ পেয়েছি এবং ইংরেজী ২য় পত্রে ৪৯ পেয়েছি যা মোটেও প্রত্যাশিত নয়। তবুও আমি অখুশি হবার কোনো কারণ নেই। মূলত বিসিএস পরীক্ষার খাতা একেক পরীক্ষক একেকভাবে দেখেন। একজন পরীক্ষক খাতা কাটার সময় যা দেখেন আরেকজন পরীক্ষক হয়তো তা দেখেন না। তাই একই বিষয়ের খাতা যখন বিভিন্ন পরীক্ষক দেখেন তখন নাম্বারের অস্বাভাবিক পার্থক্য হওয়াটা বিচিত্র কিছু নয়।
বিসিএসের হিসেবে আমার প্রাপ্ত মোট নাম্বারটা খারাপ না। এ পর্যন্ত অনেকের নাম্বার দেখে ও শুনে তাই মনে হল। খুব সম্ভবত ভাইভাতে প্রত্যাশিত নাম্বার পাইনি! তবে আমার ভাইভা খারাপ হয়েছে তা কোনো ভাবেই বলা যাবে না। যাই হোক, সবকিছু মিলিয়ে আমি এতেই সন্তুষ্ট এবং এর জন্য আল্লাহর দরবারে কোটি কোটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। তাঁর অপার কৃপাতেই আমি ক্যাডার হতে পেরেছি। প্রথম বিসিএস (৩৩ তম) এ ভাইভা দিয়ে ক্যাডার হতে পারিনি। পরবর্তীতে একটা লক্ষ্য স্থির করলাম যে, বয়স থাকতে থাকতে যে কয়টা বিসিএস পাবো সবকটাতেই আমাকে ভাইভা পর্যন্ত যেতে হবে। কপালে থাকলে হয়তো ভাইভায় পাশ করলে আর রিটেনের মার্কস মিলিয়ে ক্যাডার হলেও হতে পারি। তাই ৩৩ ও ৩৪ প্রিলি+রিটেন+ভাইভা পর্যন্ত শেষ করলেও ৩৫ এবং ৩৬ শুধু প্রিলি পাশ করে রিটেন পরীক্ষা দেয়া হয়নি। ততদিনে অবশ্য ক্যাডার হয়ে গিয়েছি।
যারা ৩৭ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন তাদের উদ্দেশে বলছি, লিখিত পরীক্ষায় একেক বিসিএসের ক্ষেত্রে একেক রকম নাম্বার উঠতে পারে। অতীত রেকর্ড তাই বলে। কেননা একেক বিসিএসের প্রশ্নের ধরন যেমন একেক রকম (তুলনামূলকভাবে সহজ কিংবা কঠিন) হয় তেমনি খাতা কাটাও ভিন্ন হতে পারে। তাই আমি বা আমরা কত পেয়েছি সেটাকে গুরুত্ব না দিয়ে গুরুত্ব দিতে হবে আপনার সামর্থ্য, আপনার প্রয়াস, আপনার প্রস্তুতি এবং পরীক্ষার হলে বা মূল যুদ্ধ ক্ষেত্রে ৩/৪ ঘন্টায় আপনার পারফরমেন্স এর উপর। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া আমরা প্রায় সব সময়ই দেখি, যে যত ভালো পরীক্ষা দেয় সে ততো ভালো নাম্বার পায় এবং ভালো ফলাফল করে থাকে। অনেকে ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষার হলে যায় কিন্তু ভালোভাবে লিখে আসা বা ভালো পরীক্ষা দিয়ে আসতে পারে না। আবার অনেকে কম প্রস্তুতি বা মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়েও ভালো পরীক্ষা দিয়ে আসতে পারে। এর কারণ কী? কিছু পরীক্ষার্থী অনেক কিছুই পড়ে যায় কিন্তু পরীক্ষার খাতায় লেখার সময় মনে করতে পারে না। আবার অনেকে প্রশ্ন কমন না পড়লেও বানিয়ে বানিয়ে বা ধারণাগত উত্তর করার ক্ষেত্রে বড় ওস্তাদ। সুতরাং এই দুইয়ের ক্ষেত্রে কোন্ শ্রেণির ভালো করার সম্ভাবনা বেশি তা তর্কযোগ্য বিষয়।
এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে কথা বলছি। আপনারা যারা ৩৭ প্রিলি পাশ করেছেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন প্রত্যেকেই নিজেকে মন থেকে একবার প্রশ্ন করুন আপনি কি সত্যিই বিসিএস ক্যাডার হবার জন্য লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন? আপনি কি জানেন ক্যাডার হবার জন্য লিখিত পরীক্ষা কতটুকু ভূমিকা রাখে? আপনাদের জানা আছে যে, প্রিলি পাশ করা ক্যাডার হবার ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখে না। যেহেতু এ পরীক্ষার নাম্বার লিখিত ও ভাইভার সাথে যোগ হয় না। এটি ক্যাডার হবার মূল যুদ্ধে অবতীর্ণ হবার 'ইয়েস কার্ড' মাত্র। আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধি হচ্ছে বিসিএস ক্যাডার হবার জন্য একটা ভালো রিটেন পরীক্ষা ও ভাইভা পাশ করাটাই সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হলে কী কী করণীয় ও কী কী বর্জনীয় এ সম্পর্কে অনেকেই যৌক্তিক, জ্ঞানগর্ভ ও নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে নানান দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন এবং বিষয়ভিত্তিক অত্যন্ত সুন্দর পরামর্শও দিচ্ছেন। আপনারা সেগুলো অনুুসরণ করতে পারেন। আমি অন্য কোনো পোস্টে কিছু দিকনির্দেশনা দেয়ার চেষ্টা করবো। সবার জন্য শুভ কামনা। আল্লাহ হাফেজ।
শরীফ উল্যাহ
সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট
৩৪ তম বিসিএস।

কোন মন্তব্য নেই:
Write comments

Thanks for your comment!!