http://protoster.blogspot.com/

শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬

বিসিএস পরীক্ষা – যেভাবে প্রস্ততি নিতে পারেন


সরকারী চাকরীর ক্ষেত্রে বিসিএস ক্যাডার পদে চাকরী করার স্বপ্ন দেখি আমরা অনেকেই। আর এ স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে যা যা করণীয়, তার কিছু পদক্ষেপ এখানে সংক্ষেপে আলোচনা করার চেষ্টা করা গেলো। পাঠকবৃন্দ, যারা এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন/করেছেন/করছেন, অনেকেরই এসকল বিষয়ে কম-বেশী জানা আছে। তারপরও সবাই এ আলোচনা থেকে কোন না কোনভাবে উপকৃত হবেন।

এ বিষয়ে যদি পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত সিলেবাসের দিকে আমরা নজর দেই, তবে দেখা যাবে, জেনারেল ক্যাডার পদের জন্য বাংলায় ২০০, ইংরেজীতে ২০০, বাংলাদেশ বিষয়াবলীতে ২০০, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীতে ১০০, গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতায় ১০০ এবং সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ১০০ নম্বরের সিলেবাস দেয়া হয়েছে। আর এর বিষয়বস্ত্ত এবং নম্বর বিন্যাস করা হয়েছে লিখিত পরীক্ষার আদলে। মূলত এ সিলেবাস থেকেই ১০০ নম্বরের প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা বা এমসিকিউ পরীক্ষার প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। যারা প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষার বৈতরণী পার হতে পারেন, তাদেরকে এ সকল বিষয়ের ওপর লিখিত পরীক্ষায় বসতে হয়। টেকনিক্যাল ক্যাডার পদে যারা আবেদন করেন, তাদেরকে অতিরিক্ত ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় বসতে হয়, যা তাদের পঠিত বিষয়ের ওপর হয়ে থাকে। অতঃপর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ১০০ বা ২০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। তারপর চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে পাবলিক সার্ভিস কমিশন।

২৮-তম বিসিএস পরীক্ষার সময় থেকে চুড়ান্ত ফলাফল জানানোর সময় যারা লিখিত ও মৌখিক – উভয় পরীক্ষায় পাশ করেছেন, তাদের সকলের রোল নাম্বার প্রকাশিত হয়ে আসছে। যারা পাশ করেছেন কিন্ত্ত কোন ক্যাডার পদে নিয়োগ পাননি, তাদের রোল নাম্বার ফলাফলের শুরুতেই প্রকাশ করা হচ্ছে। আর যারা ক্যাডার পদে নিয়োগ পাচ্ছেন, তাদের ফলাফল সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের ঘরে প্রকাশিত হয়। যারা ক্যাডার পদে নিয়োগ পাচ্ছেন না, তাদেরকে নন-ক্যাডার পদের জন্য বিবেচনা করা হয়। পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত ২৮-তম ও ২৯-তম বিসিএস পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী বেশ কিছু নন-ক্যাডার পদে তাদের নিয়োগের সুপারিশও করা হয়েছে। ৩০-তম বিসিএস পরীক্ষায় যারা লিখিত ও মৌখিক – উভয় পরীক্ষায় পাশ করেছেন অথচ কোন ক্যাডার পদে নিয়োগ পাননি, তাদের কাছ থেকে নন-ক্যাডার পদের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে যে কেউ পাবলিক সার্ভিস কমিশন-এর ওয়েব সাইট দেখে বিস্তারিত জানতে পারেন।
বিষয় – বাংলা
এ বিষয়ের প্রথম পত্রের সিলেবাসের শুরুতেই রয়েছে ব্যাকরণ – বাক্য শুদ্ধিকরণ, এক বা একাধিক অর্থবহ শব্দ দিয়ে শূণ্যস্থানপূরণ, প্রবাদ-প্রবচন, বাক্য রূপান্তর (সরল/জটিল/যৌগিক) এবং কিছু প্রদত্ত শব্দ দিয়ে বাক্য গঠন। অতঃপর ভাব-সম্প্রসারণ, সারাংশ/সারমর্ম, এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ক ছোট প্রশ্নাবলী – মোট ১০০ নম্বর।
দ্বিতীয় পত্রের সিলেবাসে যা আছে – দুটি রচনা লিখতে হয়। একটিতে রচনার সূত্র বা যে যে বিষয়ের ওপর লিখতে হবে তার উল্লেখ থাকে (With Hints), আর অন্যটিতে কোন উল্লেখ থাকে না (Without Hints)। আর একটি পত্র লিখতে হয়, যা কোন বিষয়ের ওপর হতে পারে, মানপত্র রচনা হতে পারে, বা কোন ব্যবসায়িক পত্রও হতে পারে। এখানে মোট ১০০ নম্বর।
এবার নজর দেয়া যাক ১০০ নম্বরের প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা বা এমসিকিউ পরীক্ষার প্রশ্নের দিকে। বাংলা বিষয়ে মোট ২০টি এমসিকিউ হয়ে থাকে। বিগত ৩০তম ও ৩১তম বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে দেখা যায়, বাংলাতে যে যে বিষয়ে প্রশ্ন হয়েছে, তা হল –
(১) লেখক, কবি – তাদের জন্ম/মৃত্যু সাল, স্থান ও তারিখ, রচনা (গদ্য, উপন্যাস, কাব্যগ্রন্থ, কবিতা, নাটক ইত্যাদি), ছদ্মনাম, কি কারণে বিখ্যাত, কোন্ পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন ইত্যাদি।
(২) বাংলা ব্যাকরণ – ধ্বনিতত্ব, সন্ধি বিচ্ছেদ, উপসর্গ/অনুসর্গ, সমার্থক শব্দ, কারক, সমাস ও ব্যাসবাক্য, বিভিন্ন ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় আগত শব্দাবলী, ছন্দ, বাংলা বানান, শব্দার্থ (বাংলা থেকে বাংলা/ ইংরেজী থেকে বাংলা), অলঙ্কার, শুদ্ধিকরণ ইত্যাদি।
(৩) গানের গীতিকার
(৪) বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস মূলত চর্যাপদ থেকে শুরু। যারা এ ব্যাপারে বিস্তারিত পড়তে চান এবং ভালোভাবে প্রস্ত্ততি নিতে চান, তারা মাহাবুবুল আলমের “বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস” বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। পাশাপাশি ড. হুমায়ুন আজাদের “লাল নীল দীপাবলী”ও একটি ভালো বই।
আর যদি কেউ পুরোনো বই সংগ্রহ করতে পারেন, বা কারো বড় ভাই-বোনের বই থেকে থাকে, তবে ৯৩-৯৪ সালের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক এর বাংলা সাহিত্যের বই (গদ্য এবং পদ্যের জন্য আলাদা) দুটো দেখতে পারেন। একই বছরের ব্যাকরণ বইটিও আপনার ব্যাকরণের পড়ার কাজে যথেষ্টই সাহায্য করবে।
এর পাশাপাশি বাজারে প্রচলিত গাইড বই এর ভান্ডার থেকে আপনার পছন্দসই একটি গাইড কিনে নিতে পারেন।
প্রতিদিন পড়ার সময় ঠিক করুন, নোট করুন এবং অন্তত একটি করে পরীক্ষা দিন।

কোন মন্তব্য নেই:
Write comments

Thanks for your comment!!